আজ শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লক্ষ্মীপুরে চরাঞ্চলের মানুষ। এসব চরে কোন ধরনের চিকিৎসক বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না তারা। চিকিৎসার জন্য মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে ও নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয় শহরে।
জেলার রামগতির চর আলেকজান্ডার থেকে নৌ-পথে প্রায় ১০কিলোমিটার মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে চরআবদুল্লাহর চরগজারিয়া। নৌকা থেকে নেমে হাঁটতে হয় আরও প্রায় কয়েক কিলোমিটার। মাথার ওপর প্রখর রোদ আর পায়ের নীচে উত্তাপ বালু। গ্রামাঞ্চলের মানুষ যখন ঘরে বসে বিশ্ব দেখে তখন এই চিত্র বলে দেয় চরের মানুষ কতটা অসহায়। এ চরে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। এখানে তেমন কোন পল্লী চিকিৎসক,কমিউনিটি ক্লিনিক বা ওষুধের দোকানও নেই। কেউ অসুস্থ হলে চর আর নদী পার হয়ে যেতে হয় শহরে। মুমূর্ষু রোগী হলে অনেক সময় ডাক্তারের মুখ দেখার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে হয় এসব চরাঞ্চলের মানুষদের।
এছাড়া তেলিরচর, বয়ারচর, টুমচর ও রায়পুরের চরকাচিয়া, চরঘাসিয়া, চরকানিবগা, সদর উপজেলার পশ্চিম চররমনী মোহন, চরমেঘা ও চরউভূতিসহ অন্তত ২০টি চরের লক্ষাধিক মানুষের এ করুন চিত্র প্রতিদিনের। করেনা ভাইরাসের প্রাদুভার্বে যখন টালমাটাল সারাবিশ্ব। সে থেকে বাধ যায়নি এ দেশও। কিন্তু সবদিকে করোনার মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিলেও এসব চরে তেমন ব্যবস্থা না নেয়া রয়েছে করোনার ঝুঁকি।
চরগজারিয়ার রহিম মাঝি,কুদ্দুস মাঝি, দক্ষিন চরবংশীর লিটন গাঝি,দুলাল হাওলাদারসহ সাধারণ মানুষ বলেন, অনেক সময় বড়বড় রোগ ও দুযোর্গ হয়। কিন্তু চিকিৎসা হয়না। এসব চরে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। অথচ কোন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই। ‘আমাদের খুবই কষ্ট হয়। রাস্তা নাই। মাইলের পর মাইল বহন করে ডাক্তারের কাছে নিতে হয় রোগীকে। অনেক সময় পথেই রোগীর মৃত্যু হয়। এ ধরনের দূভোর্গের মধ্যে বসবাস করছে চরাঞ্চলের মানুষ। এ মানুষগুলোর স্বাস্থ্য সেবার জন্য ভাসমান ক্লিনিক স্থাপনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য-কর্মীদের স্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থার দাবী জানান তারা।
এদিকে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল ও মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী বলেন,স্বাস্থ্য সেবা নাই বললে চলে। চরে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বারবার বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি। চরাঞ্চলের মানুষের দুভোর্গ না দেখলে বিশ্বাস করাতে পারব না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জনপ্রতিনিধিরা। অপরদিকে জনপ্রতিনিধি চরাঞ্চলে করোনাভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন ধরনের প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে কোন ধরনের গাফলতি নাই।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্ম মাসুম বলেন, প্রতিটি চরাঞ্চলের মানুষ যেন করোনা টিকা নিতে পারে, স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্খা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি চরে করোনা সংক্রমন রোধে প্রচার প্রচারনা অব্যাহত রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা: আবদুল গফ্ফার বলেন, এখন পর্যন্ত জেলায় দেড় লাখের বেশি মানুষকে করোনার টিকা দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আনা হবে। এর বাহিরে দূর্গম চরে গনটিকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন জায়গায় টিকার বাহিরে থাকবেনা। এরপরও জনবলসহ নানা সীমাবদ্ধতা থাকা শর্তেও সব স্থানে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ